সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কি? সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কি এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কেন পড়ব ! সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং হল ইঞ্জিনিয়ারিং পেশার প্রাচীনতম ও অন্যতম শাখা
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কি?
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কি এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কেন পড়ব ! সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং হল ইঞ্জিনিয়ারিং পেশার প্রাচীনতম ও অন্যতম শাখা যার বাংলা পুরকৌশল বিদ্যা। সঙ্গত কারনেই সারা পৃথিবীর প্রকৌশল বিদ্যায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় থাকে এই শাখাটি। স্বপ্ন যাদের দেশ গড়ার তাদের জন্যই পুরকৌশল।
আরও পড়ুনঃ Sim Registration Check Online – সিম নিবন্ধন যাচাই করুন
একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সাহায্য করে থাকেন। কারিগরি দক্ষতা আর সৃজনশীলতা থাকলে এ পেশায় সফলতা অর্জন করা খুবই সহজ। আবাসন খাত, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহনশীল ও টেকসই শিল্পনির্ভর উন্নয়নের জন্য একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিজাইন, কনস্ট্রাকশন এবং রক্ষণাবেক্ষন এর প্রকৌশলী বিজ্ঞান।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পৃথিবীর প্রাচীনতম ইঞ্জিনিয়ারিং বলতে গেলে যে বিষয়টি মানুষের মাথায় খেলা করে তা হলো সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বা পুরকৌশল। একজন সাধারণ মানুষ ইঞ্জিনিয়ার বলতে একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারকেই কল্পনা করে থাকেন। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং সভ্যতার শুরু থেকেই বিস্তার লাভ করে আসছে। বাংলাদেশের এমন কোন জায়গা নেই যেখানে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের ছোঁয়া লাগেনি। সবচেয়ে পুরাতন, বড় এবং সকল প্রকৌশল জ্ঞানের সমন্বয় এই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং। প্রকৌশল জ্ঞান এর মা বলা হয়। সবচেয়ে পুরান, বড় এবং সকল প্রকৌশল জ্ঞানের সমন্বয়।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং গাইডলাইন
একজন সফল সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যেমন একজন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শিক্ষার্থীর লক্ষ্য তেমনি সদ্য পাস করা ইঞ্জিনিয়ার বা প্রফেশনাল লাইফে কাজ করা ইঞ্জিনিয়ারের ও লক্ষ্য। আপনি যদি একজন সফল সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ারে সফলতা অর্জন করতে চান তাহলে কিছু বিষয় মনের ভিতর গেথে রাখলে ক্যারিয়ারে সফল হতে পারবেন।
সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা কি কি কাজ করে থাকেন ?
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং হল ইঞ্জিনিয়ারিং পেশার প্রাচীনতম শাখা, এর ক্ষেত্র হল কিছু জিনিসের নকশা এবং নির্মান করা, সেগুলি হতে পারে রাস্তাঘাট, বিমানবন্দর, সেতু, পানি সরবরাহ এবং নিস্কাশন ব্যবস্থা, বাধ, পোতাশ্রয়, রেলপথ, ফেরিঘাট, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা, ভবন এমনকি হতে পারে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর কিছু বিশেষত্ব রয়েছে। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারগণ বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করে থাকেন যেমন কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ার, যানবাহন বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার, বিদ্যুৎ এবং সেচ ইঞ্জিনিয়ার, ভূ প্রকৌশল ইঞ্জিনিয়ার, পরিবেশ ইঞ্জিনিয়ার, এবং গণপূর্ত ইঞ্জিনিয়ার।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের অফিস এবং মাঠ উভয় পর্যায়ে কাজ করতে হয়। চুক্তিকারী এবং পরামর্শক ইঞ্জিনিয়ারদেরকে একই সময়ে বিভিন্ন স্থানে কাজ করতে হয়। তাদেরকে দুর্যোগ প্রশমন এবং ব্যবস্থাপনার মত সংকটময় পরিস্থিতির সমাধানও করতে হয়। নির্মাণ প্রকৌশলীরা তেল রিগস, বহুতল বিশিষ্ট গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা অথবা বাড়ির নকশা এমন ভাবে তৈরি করেন যাতে নির্মাণ কাঠামোটি যে ভার বহনের জন্যে তৈরি করা হয়েছে তা নিশ্চিৎ করা যায়।
তারা নতুন নতুন নির্মাণ সামগ্রী ও কৌশল উদ্ভাবন করে থাকেন যেমন- বিশেষ ধরণের সেতু কাঠামো ও বিশেষ ধরণের বিল্ডিং কাঠামো ইত্যাদি। পানি ব্যবস্থাপনা ইঞ্জিনিয়াররা পানি সরবরাহ, পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা এবং দূষণ নিয়ন্ত্রনের উপর বিশেষভাবে পারদর্শী হয়ে থাকেন। হাইওয়ে ইঞ্জিনিয়ারগণ সাধারণত রাস্তা ঘাটের পুননির্মাণ, ট্রাফিক লাইট, গলি, পার্কিং স্পেস ইত্যাদির পরিকল্পনা তৈরি করে থাকেন। হাইওয়ে ইঞ্জিনিয়ারগন প্রধানত রাস্তা নির্মান এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কাজের সাথে জড়িত।
- অবকাঠামো নির্মাণের জন্য পরিচালিত জরিপের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা।
- সংগৃহীত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রকল্প পরিকল্পনা তৈরি করা।
- প্রকল্পের বাজেট, ঝুঁকি, পরিবেশের উপর প্রভাব ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয় খতিয়ে দেখা।
- প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সরকারি অনুমোদনের দরকার হলে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া।
- কম্পিউটার মডেল বানানো।
- প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কাঁচামালের খরচ, যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় কর্মীসংখ্যার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে জানানো।
- প্রকল্পের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মাটির গুণাগুণ পরীক্ষা করা।
- প্রয়োজনীয় নির্মাণসামগ্রীর মান নিশ্চিত করা।
- প্রকল্প চলার সময় নির্মাণ সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকাণ্ডের তদারকি করা।
- প্রকল্পে নিযুক্ত কর্মীদেরকে উপযুক্ত নির্দেশনা দেয়া।
- প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত অবহিত করা।
- প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে কর্তৃপক্ষকে কারিগরি পরামর্শ দেয়া।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং
একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয় ?
এ পেশায় কাজ করতে হলে গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানে ভালো জ্ঞান থাকা আবশ্যক। পাশাপাশি নকশা ও মডেলিংয়ের কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবহারে দক্ষ হতে হবে আপনাকে।
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আপনার অবশ্যই বিএসসি ডিগ্রি থাকতে হবে। তবে ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীরা উপ-সহকারী ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ Sim Registration Check Online – সিম নিবন্ধন যাচাই করুন
বয়সঃ প্রকল্পভেদে বয়সের সীমা নির্ধারিত হয়। সাধারণত আপনার বয়স কমপক্ষে ২২ বছর হতে হবে।
অভিজ্ঞতাঃ এ পেশায় অভিজ্ঞদের প্রাধান্য রয়েছে। বিশেষ করে বড় প্রকল্পগুলোতে কাজ করার জন্য অভিজ্ঞতার কোন বিকল্প নেই।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?
সরকারি-বেসরকারি প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে সহকারী ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে আপনার ক্যারিয়ার শুরু হবে। চাকরির ৩-৫ বছরের মধ্যে পদোন্নতি পাবেন। এ ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সরকারি পদ হলো প্রধান প্রকৌশলী। প্রাইভেট ফার্ম বা কোম্পানির ক্ষেত্রে একজন ব্যবস্থাপনা নির্বাহী হিসাবে নিয়োগ পেতে পারেন। যেমনঃ
সরকারী চাকরিঃ পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপদ বিভাগ, এলজিইডি, এলজিডি, বাংলাদেশ রেলওয়ে, বাংলাদেশ সড়ক, পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সেনাবাহিনী, মিলিটারী ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস, ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশন, বিভিন্ন বন্দর, ব্যাংকের ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশন, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানী লি, ইলেক্ট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিঃ, ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, পল্লী বিদ্যুৎ কোম্পানি লিমিটেড, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিঃ, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, ডিপার্টমেন্ট অফ পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি।
একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের মাসিক আয় কেমন ?
প্রতিষ্ঠান ও কাজ ভেদে এন্ট্রি লেভেলে একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের মাসিক আয় সাধারণত ৳২০,০০০ থেকে শুরু করে ৳৫০,০০০ পর্যন্ত হতে পারে। সরকারি খাতে জাতীয় বেতন স্কেল অনুসরণ করে সাধারণত ৯ম জাতীয় গ্রেডে ৳৩২,০০০ স্কেলে নিয়োগ দেয়া হয়, যা পরবর্তীতে পদোন্নতির সাথে সাথে বেড়ে যায়। চাকরির পাশাপাশি অনেক সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করে মাসে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করে থাকেন। তবে এর জন্য কারিগরি কাজের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন।
COMMENTS