শিশুরা রাতে কেন কাঁদে? আপনার শিশুর কান্না থামানোর উপায় নিয়ে চিন্তিত? শিশুরা দিনের চেয়ে রাতেই বেশি কান্নাকাটি করে। তাই জেনে নিন শিশুর কান্না থামানো
শিশুরা রাতে কেন কাঁদে? আপনার শিশুর কান্না থামানোর উপায় নিয়ে চিন্তিত? শিশুরা দিনের চেয়ে রাতেই বেশি কান্নাকাটি করে। তাই জেনে নিন শিশুর কান্না থামানোর সহজ পাঁচটি উপায়।
আরও পড়ুনঃ দ্রুত ডায়াবেটিস কমানোর উপায় বা ডায়াবেটিস সারানোর উপায়
শিশুরা রাতে কেন কাঁদে?
একটি শিশু কান্নার মাধ্যমে তার খিদে, ভয়, অস্বস্তি অথবা যে কোন প্রয়োজন প্রকাশ করে। জন্মের পর প্রথম তিন মাস পর্যন্ত একটি শিশু কোনো কারণ ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে ২৪ ঘন্টায় ৩ থেকে ৪ বার কাঁদে। শিশু কাঁদলে সব মা-বাবাই চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং দ্রুত কান্না থামানোর জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেন।
বিশেষভাবে মায়েরা শিশুর কান্নায় বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং মনে করেন বুকের দুধে বাচ্চার হয়তো পেট ভরছে না এবং এ কারণে কান্না করছে। কিন্তু এটা সবসময় ঠিক নয়, ক্ষুধা ছাড়াও বিভিন্ন কারণে একটি শিশু অনবরত কাঁদতে পারে।
একটি শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিন থেকেই মূলত তার কান্নাকাটির শুরু। বেশিরভাগ মায়েরাই শিশুর কান্না থামানোর উপায় নিয়ে খুব চিন্তিত থাকেন। বাচ্চারা যেহেতু কথা বলতে পারে না তাই তারা তাদের যেকোনো সমস্যা কান্নাকাটির মাধ্যমে প্রকাশ করে।
বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পর সাধারণত একটি মা অত্যন্ত ক্লান্ত থাকেন এবং নিদ্রাহীনতায় ভোগেন। এমন সময় সারারাত ধরে বাচ্চার কান্নাকাটি একটি মায়ের জন্য অত্যন্ত বিরক্তিকর এবং চিন্তার বিষয়। সাধারণত বাচ্চারা দিনের চেয়ে রাতে বেশি কান্নাকাটি করে থাকে। তবে সময়ের সাথে সাথে এ কান্নাকাটি কমে আসতে থাকে। রাতে বাচ্চাদের কান্নাকাটি করার কিছু নির্দিষ্ট কারণ থাকে যা বেশিরভাগ বাচ্চাদের ক্ষেত্রে একরকম। যেমনঃ
বাচ্চার ক্ষুধা লাগলে
বিছানা ভিজিয়ে ফেললে
অতিরিক্ত ঠান্ডা অথবা গরম লাগলে
পেটে ব্যথা করলে
অসুস্থ থাকলে

শিশুর কান্না থামানোর উপায়
বাচ্চাদের কান্না থামানো মোটেও সহজ কোনো কাজ নয়। অনেক বাচ্চারাই আছে খুব জেদী হয়ে থাকে তাদেরকে শান্ত করা অত্যন্ত পরিশ্রমের কাজ। রাতে সাধারণত বাচ্চাদেরকে ঘুম পাড়ানোর জন্য মায়েরা চেষ্টা করতে থাকেন। এমন সময় আপনার বাঁচাটি যদি চিৎকার করে কাঁদে তাহলে প্রথমে বুঝতে হবে তার কি কোন ধরনের সমস্যা হচ্ছে কিনা। চলুন জেনে নেই শিশুর কান্না থামানোর পাঁচটি উপায় সম্পর্কেঃ
১. রাতে আপনার বাচ্চাটি হঠাৎ করে কেঁদে উঠলে প্রথমে খেয়াল করুন আপনার বাচ্চাটির কি ক্ষুধা লেগেছে কিনা। বাচ্চাদের পাকস্থলী আকারে ছোট হওয়ার কারণে তাদের খুব দ্রুত ক্ষুধা লাগে। যার কারণে রাতে ঘুমানোর সময় তারা কিছুক্ষণ পর পর জেগে উঠে এবং কান্নাকাটি করে। তখন সাথে সাথে বাচ্চাকে খাইয়ে দিলে আবার তারা শান্ত হয়ে যায়।
২. শিশুর কান্না থামাতে যেয়ে তাকে জোড়ে জোড়ে ঝাকাতে যাবেন না। এতে বাচ্চারা আরো বেশি ঘাবরে যায়। তখন কান্না থামানোর বদলে আরো উচ্চস্বরে কান্নাকাটি করতে থাকে। বাচ্চাকে শান্ত করে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরুন। অস্থির হতে যাবেন না আপনাকে অস্থির হতে দেখলে বাচ্চাও অস্থির হয়ে যাবে। আপনি নিজে শান্ত থেকে বাচ্চাকে শান্ত করার চেষ্টা করুন। দেখবেন কিছুক্ষণ কান্নাকাটি করার পর বাচ্চা ধীরে ধীরে কান্না থামিয়ে দেবে।
৩. ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে দেখুন আপনার বাচ্চা আসলে কেন কান্নাকাটি করছে। কোথাও কোনো ব্যথা কিংবা মশার কামড় হয়তো আপনার বাচ্চার কান্নার কারন হতে পারে। অনেক সময়ে রুম টেম্পারেচার কারণেও বাচ্চার অতিরিক্ত ঠান্ডা অথবা গরম লাগে। একদম ছোট বাচ্চারা যেহেতু তাদের কোনো অসুবিধার কথা বলতে পারে না তাই তাদের মূল সমস্যাটি বুজতে কিছুটা সময় লাগে। বাচ্চাকে কোলে নিয়ে কিছুক্ষণ হাঁটুন। অন্য কোন সমস্যা না থাকলে কিছুক্ষণ পর আপনার বাচ্চা এমনিতেই কান্না থামিয়ে দিবে।
৪. অনেক সময়ই বাচ্চার কান্নার কোন সঠিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। খেয়াল রাখুন আপনার বাচ্চাটি পেটে ব্যথা জনিত কোন কারণে কান্নাকাটি করছে কিনা। অনেক সময় ছোট বাচ্চাদের পেটে গ্যাস জমে ব্যথা হতে পারে। একারণেও অনেক বাচ্চা রাতের বেলা কান্নাকাটি করে। এক্ষেত্রে একজন ভালো শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে বাচ্চাকে চিকিৎসা করানো দরকার।
৫. রাতের বেলা বাচ্চারা ঘনঘন বিছানা ভিজিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে ভিজা কাপড় চোপড়ে বাচ্চার ঘুম ভেঙে গিয়ে কান্নাকাটি করে। অনেক মায়েরাই রাতের বেলা বাচ্চাদের ডায়াপার পড়িয়ে ঘুম পাড়ান। যাতে ঘনঘন বাচ্চার ঘুম ভেঙ্গে না যায় এবং কান্নাকাটি না করে। তবে অনেক বাচ্চাদেরই সেনসিটিভ স্কিনের জন্য ডায়পারেও এলার্জি হয়ে থাকে। সে ব্যাপারটি খেয়াল রেখে বাচ্চাদের ডায়াপার ব্যবহার করাবেন।
মনে রাখবেন, শিশুরা প্রয়োজনের কথা বলতে পারে না। তাদের প্রয়োজনের ও যোগাযোগের মাধ্যমই হলো কান্না। শিশুরা কান্নাকাটি করবেই, কান্না করলে ভয় পাবেন না অথবা বিরক্ত হবেন না। শিশুর প্রতি অধিক যত্নশীল হোন, ওদের বুঝতে চেষ্টা করুন এবং অস্বাভাবিক কিছু মনে হলে অপেক্ষা করবেন না। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
COMMENTS