HomeUncategorized

রেজভীয়া দরবার শরীফ নেত্রকোনা – Rezvia Dorbar Shorif

রেজভীয়া দরবার শরীফ নেত্রকোনার (Rezvia Dorbar Shorif) সতরশীরে বাংলার আলা হজরত খ্যাত আল্লামা গাজী আকবর আলী রেজভী ছিলেন সুমহান মর্যাদার উচ্চাসনে সুপ্রত

জামা দে, আমার কোনো হুশ নেই কিন্তু ফেসবুক লাইভের কথা ভুলেনি পরীমনি
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম, নিয়ত, সময় ও ফজিলত
The Bravest Girl in the World- Arnika Al-Amin

রেজভীয়া দরবার শরীফ নেত্রকোনার (Rezvia Dorbar Shorif) সতরশীরে বাংলার আলা হজরত খ্যাত আল্লামা গাজী আকবর আলী রেজভী ছিলেন সুমহান মর্যাদার উচ্চাসনে সুপ্রতিষ্ঠিত। প্রাথমিক শিক্ষক, জ্ঞানী-গুণী অসাধারণ মুসলিম মিল্লাতের জন্য অনন্য দৃষ্টান্ত। তার অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণইয়। অনুপম জীবনাদর্শ অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়।

আল্লামা গাজী আকবর আলী রেজভী পথ ভোলা মুমিনকে দিয়েছেন পথের সন্ধান। সত্য প্রকাশক, সত্য প্রচারক, মৃত্যু সুন্নতকে জিন্দা ক্বারী , বেলায়েতের উচ্চাসনে আসীন হন। আধ্যাত্মিক সাধক, অসাধারণ প্রতিভা, কঠোর সাধনা ও বহুমুখী অবদান এর কারণেই তিনি এই শ্রদ্ধার আসনে প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৫ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ হযরত আল্লামা গাজী আকবর আলী রেজভী সুন্নী আল কাদরী । সুন্নিয়তের প্রচার ও প্রসারে বাংলার আলা হজরত নামে খ্যাত আল্লামা গাজী আকবর আলী রেজভী তিনি মহান অলিয়ে কামেল ও বিশিষ্ট আলেম। তার নবীপ্রেমের তুলনা ছিল বিরল। আধ্যাত্মিক জগতের মহান নক্ষত্রের পরপারে পদার্পণে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।

রেজভীয়া দরবার শরীফ কিভাবে প্রতিষ্টিত হল ?

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে সুন্নীয়তের প্রতিষ্ঠাতা একমাত্র তিনিই । রেজভীয়া দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা ও সুন্নিয়তের কর্ণধার আল্লামা গাজী আকবর আলী রেজভীর বিভিন্ন আলোচনা শুনতে আপনাকে সাদর আমন্ত্রণ। আপনি যদি আল্লামা গাজী আকবর আলী রেজভীর বিভিন্ন ঈমানী আলোচনা শুনতে চান তাহলে নিচে ক্লিক করুন।

রেজভীয়া দরবার শরীফ নেত্রকোনায় তিনি আশ্রয় স্থাপন করেন। আমরা খুব বেশি কথা বলব না, উনার সারাটি জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন নবীর সুন্নতকে জিন্দা করতে। তিনি তার সারাটি জীবন মানুষকে নবীর সুন্নত ও ঈমানের পরিচয় দিয়ে গেছেন । আমরা তার অনুসারী হতে হলে অবশ্যই তিনির কথামতো আমাদের জীবন যাপন করা উচিত।

তিনি আলা হযরত ইমাম আহমদ রেজা খান এর সুযোগ্য ছাত্র ছিলেন। তিনি মারেফাতের জ্ঞান লাভ ও বায়াতে রাসুল গ্রহণ করেন, শাহাজাদায়ে আলা হযরত আলে রহমান, মুফতীয়ে আজম হিঁন্দ মোস্তফা রেজা খাঁন রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পবিত্র হাতে বায়াতে রাসুল গ্রহণ করেন। তিনি মুর্শিদের নিকট কঠোর রিয়াজত ও সাধনা করে অতি উচ্চ স্থানে আসীন হন। তখন উনার মুর্শিদ আল্লামা রেজভী সাহেবকে খেলাফত দান করেন। তিনি অনেক বছর ভারত বর্ষে ইসলাম প্রচার করেন। তারপর, মুর্শিদের হুকুমে বাংলাদেশে এসে ইসলাম প্রচার শুরু করেন। তখন সমসাময়িক বাংলাদেশে কয়েকজন সুন্নী আলেম ছিল। তাদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য ছিল, আল্লামা আবেদ শাহ আল মাদানী, আল্লামা সৈয়দ আজিজুল হক শেরে বাংলা, আল্লামা সৈয়দ আহমদ শাহ ছিরিকোটি রহমাতুল্লাহি আলাইহি।

আল্লামা গাজী আকবর আলী রেজভী সাহেব হুজুর কেবলার গ্রন্থাবলী

মোজাদ্দেদে জামান, ইমামে আহলে সুন্নাত আল্লামা গাজী আকবর আলী রেজভী সুন্নী আল ক্বাদেরী মাদ্দা জিল্লুহুল আলী। তিনি প্রায় সাড়ে চারশত কিতাব রচনা করেন। এক একটি কিতাবের পরিধিও ছিল উল্লেখ্যযোগ্য। তাফসীরে রেজভীয়া সুন্নীয়া ক্বাদেরীয়া এবং ঈমানভান্ডার বিশখন্ড তার উজ্জল প্রমাণ।

আরও পড়ুনঃ-


 
তাফসীরে রেজভীয়া সুন্নীয়া ক্বাদেরীয়া: কোরআন মাজিদের প্রামানিক অনুবাদ ও তাফসীর। তিনি প্রত্যেকটি আয়াতের পৃথক পৃথক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেছেন। যাতে যে কোন বিষয়ে সহজে জ্ঞান লাভ ও গবেষণা করা যায়। তিনি সহজ ও সাবলীল ভাষায় কোরআন ও হাদিসের ব্যাখ্যা অনুযায়ী তাফসীরে রেজভীয়া সুন্নীয়া ক্বাদেরীয়া রচনা করেন।

 
ঈমানভান্ডার বিশখন্ড: তিনির সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য গ্রন্থ হল ঈমানভান্ডার বিশখন্ড। এই গ্রন্থে তিনি হুজুরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম শান ও মান বিশেষভাবে উল্লেখ্য করেছেন। এই গ্রন্থের মত অতি মহামূল্যবান রচনাবলী খুবই পাওয়া যায়।

 
আদিল্লাতুচ্ছামা: ইসলামী গান বাজনা বা আধ্যাতিœক ছেমার আয়োজন করা কত রহমত ও বরকতের কাজ তা এই গ্রন্থের মধ্যে বিবরণ রয়েছে। রাসুলে পাকের সময় থেকে আজ পর্যন্ত যত আউলিয়ায়ে কেরাম দুনিয়াতে আগমন করেছেন, সবাই ইসলামী গান বাজনা বা আধ্যাতিœক ছেমার আয়োজন করেছেন। সবাই একে জায়েজ বলে ঘোষণা করেছেন। তার প্রমাণ এই গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে।

 
দিদারে নূরে খোদা: তিনির দিদারে নূরে খোদা উল্লেখ্যযোগ্য একটি আমলের কিতাব। এই কিতাবে কিভাবে রাসুলে পাকের দীদার লাভ করা যায় এবং ১৬টি নফল নামাজের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ রয়েছে।

 
নির্ভয় বাণী বা মারেফাত ভান্ডার: এই কিতাবে এলমে মারেফাত, এলমে হাকিকত,  পীর মুরিদি, অলী গণের শান ও মান আজমত বিশতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। কিয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে আউলিয়াগণের জন্য কি বিশেষ অফার সমূহ রেখেছেন, তা এই কিতাবে রয়েছে।

 
আদাবুল আযান: আযান একটি গুরুপ্তপূর্ণ ইবাদত। বর্তমানে আযান নিয়ে ফেতনা ফাসাদ দেখা দিয়েছে। এই আযান সর্ম্পকে সকল ফেতনা ফাসাদকে উপেক্ষা করে একটি পূর্ণাঙ্গ কিতাব রচনা করেন।

 
কালিমায়ে ঈমান ও কুফর: কোন কোন কথা বার্তার দ্বারা কুফুরী হয়, ঈমান বরবাদ হয়ে যায়, এই সকল বিষয়ে সকল ঈমানদার মুসলমান জানা একান্ত কর্তব্য। এই বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কিতাব রচনা করেন।

 
জাহেরী ও বাতেনী ঈমানের পরিচয়: ঈমান কি? ঈমান কাকে বলে? ঈমানের জাহেরী ও বাতেনী পরিচয় দিয়েছেন উক্ত কিতাবে। উক্ত কিতাবটি ঈমানের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ একটি কিতাব।

রেজভীয়া দরবার শরীফ রেজভী বাবার বাসস্থান

আল্লামা রেজভী সাহেব হুজুর কেবলা তিনির জন্মস্থান থেকে হিজরত করে নেত্রকোণা জেলাধীন সতরশ্রী গ্রামে এসে বসতি স্থাপন ও ইসলাম প্রচার কেন্দ্র গড়ে তোলেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে তিনির খানাকা স্থাপন করে ইসলাম প্রচার কার্য শুরু করেন।

রেজভীয়া দরবার শরীফ
রেজভীয়া দরবার শরীফ

 
বাহাছ ও মোনাজারা: বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বাতেল ফেরকাদের সাথে বাহাছ ও মোনাজারা হয়েছে। সকল বাহাছেই তিনি জয়ী হয়েছেন। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখ্য যোগ্য হল ”বদরপুরের বাহাস” এবং নেত্রকোণার শহরের বাহাস। ১৯৭৭ সালে এপ্রিল মাসের ১৪ তারিখে বদরপুর বাজার মাদ্রাসার প্রাঙ্গণে তাবলীগ জামাতের সাথে মোনাজারা হয়। উক্ত মোনাজারায় তাবলীগ জামাত শোচনীয় ভাবে পরাজিত হয় এবং উশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, পরে স্থানীয় লোকেরা তাদেরকে হালকা উত্তম মধ্যম দেয়। উক্ত বাহাছের সভাপতি ছিলেন তখনকার চেয়ারম্যান মো: মনিরুল হক ৯নং মাইজখার ইউনিয়ন পরিষদ। ১৯৯৭ সালে নেত্রকোণা সদরে জেলা অফিসে মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরীর সাথে বাহাছ হয়। উক্ত বাহাছে নুরুল ইসলাম ওলীপুরী ও শোচনীয় ভাবে পরাজিত হয়। এছাড়াও ব্রিটিশ আমলে রংপুরে খ্রিস্টান পাদ্রীর সাথে বাহাছ হয়। উক্ত বাহাছে খ্রিস্টান পাদ্রী ও শোচনীয় ভাবে পরাজিত হয় এবং সে বাংলাদেশ ছেড়ে একবারে চলে যায়। কাদিয়ানিদের সাথে ও বাহাছ হয় তিনি ঐ বাহাছে ও জয়ী লাভ করেন।

আরও পড়ুনঃ-


 
মহিউসুন্নাহ: মৃত সুন্নাত জিন্দাকারী। আল্লামা রেজভী সাহেব হুজুর কেবলা অসংখ্য মৃত সুন্নাত জিন্দা করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য হল, মসজিদে জুমার দিন দ্বিতীয় আযান দরজায় দিতে হবে, কাঠের তৈরী মিম্বার, কালো রংঙের পাগড়ির ব্যবহার, কালো টুপির ব্যবহার, কবরের পাড়ে আযান, বিবাহ শাদীতে ইসলামী গান বাজনা ও প্রচার করা, আধ্যাতিœক ছেমা, একাধিক মুয়াজ্জিনে আযান প্রদান করা, মসজিদের ভিতরে বিবাহ কার্য সমাধান ইত্যাদি। সর্বোপরি, এই বাংলার জমিনে    তাজা রক্তের বিনিময়ে ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম উদযাপন করেছেন।

COMMENTS

WORDPRESS: 0