আপনি মোবাইল রিচার্জ ব্যবসাটি আপনার অবসর সময়ে করতে পারেন বা এটি একটি পূর্ণকালীন ব্যবসা হিসাবেও নিতে পারেন। আপনি বেকার বা অবসর সময় পার করলে মোবাইল রিচা
আপনি মোবাইল রিচার্জ ব্যবসাটি আপনার অবসর সময়ে করতে পারেন বা এটি একটি পূর্ণকালীন ব্যবসা হিসাবেও নিতে পারেন। আপনি বেকার বা অবসর সময় পার করলে মোবাইল রিচার্জ শপ ব্যবসা বিবেচনা করতে পারেন। এটি এই সময়ের সর্বশেষ এবং ট্রেন্ডি ব্যবসাগুলির মধ্যে একটি।
একটি মোবাইল রিচার্জ ব্যবসা শুরু করার জন্য এককালীন ছোট বিনিয়োগ প্রয়োজন, এটি আপনাকে প্রতি চার্জ কমিশনের শর্তে অবিলম্বে ফেরত দেয়। এটি কেবল ঝামেলা মুক্ত ব্যবসা নয়, এটি শীঘ্রই আপনাকে আয়ের ধারাবাহিক ধারা সরবরাহ করে।
বাংলাদেশ মোবাইল রিচার্জের ব্যবসা খুব লাভ জনক। অনেক মানুষই এই মোবাইল রিচার্জের ব্যবসা করে লাভবান হচ্ছেন। অত্যন্ত কম খরচে এবং পরিশ্রমে মোবাইল রিচার্জ ব্যবসা করা যায়। মোবাইল ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলছে এবং মোবাইল রিচার্জ চাহিদা ও সেইসাথে বেড়ে চলেছে।
মোবাইল রিচার্জ ব্যবসা
মোবাইল রিচার্জ ব্যবসা শুধু লাভজনক নয়, বাংলাদেশে কম খরচে ব্যবসার সুযোগ। মোবাইল রিচার্জ ব্যবসা শুরু করা এবং মোবাইলের অনুপ্রবেশ হিসাবে মুনাফা অর্জন করা বোধগম্য এবং মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে।
আপনি খুব কম বিনিয়োগ দিয়ে শুরু করতে পারেন, যা আপনার নিজের মোবাইল রিচার্জ ব্যবসা শুরু করার প্রধান সুবিধা। যদিও আপনার প্রচুর বিনিয়োগ করার দরকার নেই, কেবল একটি সাধারণ মোবাইল যা মোবাইল রিচার্জ করার জন্য সক্রিয়। কিন্তু, এটি যতটা সহজ মনে হচ্ছে ততটা সহজ নয়।
আপনি যদি এই ব্যবসায় সফল হতে চান তবে অনুসরণ করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট পদক্ষেপ রয়েছে। আচ্ছা, নীচের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলি জানা যাক।
১. মোবাইল রিচার্জ ব্যবসা স্থান নির্ধারণ
যে কোন ব্যবসা শুরু করার আগে ব্যবসা স্থান নির্ধারণ করে নেওয়া উচিত। যদি আপনার ব্যবসার স্থান নির্ধারণ হয়, তারপর বাকি সব কাজের ব্যাপারে চিন্তা করতে হবে। মোবাইল রিচার্জ ব্যবসার জন্য প্রথমে আপনাকে ব্যবসার স্থান নির্ধারণ করতে হবে।
ব্যবসা করার জন্য সবচেয়ে সুযোগ্য স্থান হলো:
- বাজারের মাঝামাঝি কোন স্থান
- শপিং মল, হাসপাতাল , বা রেস্টুরেন্ট কাছাকাছি কোন স্থান
- প্রথমে গ্রাহকের চোখে পড়ে এমন কোন স্থান
- বাস স্টেশন ট্রেন স্টেশন এর কাছাকাছি কোন স্থান
ব্যবসার স্থান নির্ধারণ করার আগে মনে রাখতে হবে যে, ব্যবসা স্থান যাতে গ্রাহকদের কাছাকাছি হয়। তারা যাতে খুব সহজে সে স্থানটি খুঁজে বের করতে পারে। ব্যবসা স্থান খুঁজতেই আপনাকে সবচেয়ে বেশি সময় ও শ্রম দিতে হবে।
কারণ, ব্যবসা স্থান ঠিক না হলে আপনার ব্যবসা কখনো লাভ দায়ক হবে না। আপনার মনে রাখতে হবে, প্রথমেই একটি ছোট্ট দোকান দিয়ে শুরু করতে হবে এবং যখন ব্যবসায় লাভ হবে তখন আস্তে আস্তে দোকান বড় করতে হবে।

মোবাইল রিচার্জ শপ ব্যবসা
২. মোবাইল রিচার্জ ব্যবসা প্রয়োজনীয় জিনিস
মোবাইল রিচার্জ এর ব্যবসা করার জন্য তেমন বেশি কিছু দরকার হয় না। বর্তমানে, স্মার্ট ফোন এবং ইন্টারনেটের সাহায্যে সফটওয়্যার ব্যবহার করে খুব সহজে মোবাইল রিচার্জ করা যায়। কিন্তু, অতীতে মোবাইল রিচার্জ ব্যবসা করার জন্য অনেক গুলো মোবাইল ফোনের দরকার হতো এখন হয় না।
- আরও পড়ুন: সফল উদ্যোক্তা হতে হলে কি করবেন?
স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট কানেকশন এর সাহায্যে খুব সহজে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন এবং অল্প সময়ে অনেক লাভবান হতে পারেন। তবে, প্রথমিকভাবে সফটওয়্যারের বদলে সাধারণ ফিচার ফোন দিয়ে শুরু করাই ভাল।
৩. মোবাইল রিচার্জ ব্যবসা মূলধন
৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে শুরু করে দিতে পারেন এই ব্যবসা। কিন্তু, মাথায় রাখবেন, মূলধন নির্ভর করবে আপনার আনুসাঙ্গিক খরচের উপর।
আমরা খরচের একটি তালিকা দিচ্ছি:
মূলধনের খাত | টাকার পরিমাণ |
---|---|
একটি চেয়ার | ৪০০ |
একটি টেবিল | ৫০০ |
ডুয়েল সিমের ৩টি মোবাইল | ৬,০০০ |
সিম ৬টি | ১,২০০ |
মোবাইলে রিচার্জ | ৩০,০০০ |
সর্বমোট | ৩৮,১০০ টাকা |
আমি এখানে দোকান ভাড়ার খরচ উল্লেখ করিনি। আর, মোবাইল রিচার্জ চাইলে কম করেও রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে মূলধন আরও কম লাগবে।
৪. লাভ
আপনি যত বেশি টাকার মোবাইল রিচার্জ করবেন, তত বেশি লাভ হবে। আর বিভিন্ন কোম্পানি সিম বিক্রির উপরও কমিশন থাকে। সেক্ষেত্রেও আরও লাভ পাবেন।
বিভিন্ন কোম্পানি ১,০০০ টাকা রিচার্জের উপর কমিশন প্রদান করে। নিচে তালিকাটি দেয়া হলো:
মোবাইল কোম্পানি | কমিশন |
---|---|
গ্রামীণফোন | ২৭ টাকা ৫০ পয়সা |
বাংলালিংক | ২৭ টাকা ৫০ পয়সা |
টেলিটক | ৩০ টাকা |
এয়ারটেল | ২৮ টাকা |
রবি | ২৭ টাকা ৫০ পয়সা |
৫. ডিস্ট্রিবিউটার বা ডিলার খুঁজে বের করা
মোবাইল রিচার্জ ব্যবসা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো ডিস্ট্রিবিউটার বা ডিলার খুঁজে বের করা। আপনি যদি ডিস্ট্রিবিউটার বা ডিলার খুঁজে বের করতে না পারেন, তাহলে আপনি ব্যবসা করতে পারবেন না।
এ ব্যবসা করতে যে কোন মোবাইল কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটার বা ডিলারের সাথে আপনার যোগাযোগ করতে হবে। আপনার আশে পাশে যারা রিচার্জের ব্যবসা করে তাদের সাথে যোগাযোগ করলেই কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটরের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।
যেসব কোম্পানির ডিলারশিপ নিতে পারবেন তা হলো:
যেকোনো একটি মোবাইল কোম্পানির ডিলারশিপ নিলে আপনি এ ব্যবসা শুরু করতে পারেন। কিন্তু ব্যবসা উন্নতি করতে হলে সব মোবাইল কোম্পানির ডিলারশিপ নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে, তাহলে আপনার গ্রাহক অনেক বেশি হবে এবং লাভের পরিমাণ অনেক বেশি হবে।

মোবাইল রিচার্জ ব্যবসা
৬. ব্যবসা প্রচার করা
আপনার নতুন শুরু করা ব্যবসা গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য, আপনাকে আপনার ব্যবসা প্রচার করতে হবে। প্রথমে, আপনাকে আপনার ব্যবসার জন্য একটি ব্যানার বা পোস্টার ছাপাতে হবে, যা দেখে গ্রাহক আপনার কাছে মোবাইল রিচার্জ করাতে আসবে।
- আরও পড়ুন: টেলিটক বর্ণমালা সিম রেজিষ্ট্রেশন ও অফার ২০২৩।
এছাড়া, আপনি আপনার ব্যবসা প্রচার করার জন্য বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ করতে পারেন। ব্যবসা প্রচার করতে কিছুটা অর্থ খরচ করতে হতে পারে কিন্তু ভালোভাবে ব্যবসা প্রচার করলে আপনার গ্রাহক অনেক বেশি হবে এবং আপনি অনেক বেশি লাভ করতে পারেন। যদি, লিফলেট এখন খুব একটা প্রয়োজন হয় না। বড় করে ব্যানার থাকাটাই যথেষ্ঠ।
৭. অর্থের অপচয় না করা
ব্যবসা প্রচার করতে গিয়ে এবং ব্যবসার স্থান করতে গিয়ে অনেকেই অনেক বেশি টাকা অপচয় করে ফেলে। কিন্তু, অযথা অর্থ অপচয় করার কোন মানেই হয়না। আপনি ছোট্ট একটি স্থানে কেবলমাত্র একটি টেবিল আর চেয়ার নিয়ে ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন এজন্য অনেক বেশি টাকা অপচয় করতে হবে না।
- আরও পড়ুন: অল্প পুঁজিতে ব্যবসার আইডিয়া।
আর ব্যবসা স্থান যদি ভাল হয় তাহলে প্রচারের জন্য আপনার তেমন বেশি টাকা খরচ করতে হবে না। অতএব, অল্প খরচে বেশি লাভ করা কথা চিন্তা করতে হবে এবং অযথা টাকা অপচয় করা যাবে না।
মোবাইল রিচার্জ ব্যবসার পরিশেষ
অতএব, মোবাইল রিচার্জের ব্যবসা করার কথা আপনি চিন্তা করতে পারেন, অল্প কিছু নিয়ম মেনে চললে আপনি মোবাইল রিচার্জ ব্যবসা শুরু করতে পারেন এবং ব্যবসায় লাভ করতে পারেন। ব্যবসা শুরু করার আগে ঠাণ্ডা মাথায় ব্যবসা সম্পর্কে সব তথ্য সংগ্রহ করে নিন এবং ব্যবসা শুরু করুন। আশা করি, আপনি লাভবান হতে পারবেন।
COMMENTS