বয়স্ক ভাতা এবং বিধবা ভাতার আবেদন ফরম ২০২২

Homeব্যাংকিং

বয়স্ক ভাতা এবং বিধবা ভাতার আবেদন ফরম ২০২২

বয়স্ক ভাতা বয়স্ক ভাতা হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রশংসনীয় কার্যক্রম । এই কার্যক্রমের অধিনে বয়স্ক ভাতা বাংলাদেশের বয়স্ক ব্যাক্তি যারা দুস্থ, উপার্জ

বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম জামানত বিহীন সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা
নগদ একাউন্ট দেখার নিয়ম এবং নগদ একাউন্টের সুবিধা ও অসুবিধা
EBL Aqua Master Card কিভাবে পাওয়া যাবে এবং পেতে কি কি ডকুমেন্টস লাগবে?

বয়স্ক ভাতা

বয়স্ক ভাতা হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রশংসনীয় কার্যক্রম । এই কার্যক্রমের অধিনে বয়স্ক ভাতা বাংলাদেশের বয়স্ক ব্যাক্তি যারা দুস্থ, উপার্জনহীন বা স্বল্প উপার্জনক্ষম বৃদ্ধ বা বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা ও মর্যাদা বৃদ্ধিতে প্রদান করা হয়ে থাকে । বাংলাদেশে এই কর্মসূচি শুরু হয় ১৯৯৭-৯৮ অর্থ বছরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ।

দেশের বয়োজ্যেষ্ঠ দুস্থ ও স্বল্প উপার্জনক্ষম অথবা উপার্জনে অক্ষম বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে ও পরিবার ও সমাজে মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৯৭-৯৮ অর্থ বছরে  ‘বয়স্কভাতা’ কর্মসূচি প্রবর্তন  করা হয়। প্রাথমিকভাবে দেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলাসহ ১০ জন দরিদ্র বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে প্রতিমাসে ১০০ টাকা হারে ভাতা প্রদানের আওতায় আনা হয়। পরবর্তীতে দেশের সকল পৌরসভা ও সিটিকর্পোরেশন এ কর্মসূচির আওতাভুক্ত করা হয়।

বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের অঙ্গিকার হিসেবে ২০২১ সালের মধ্যে বয়স্কভাতাভোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে ক্ষমতা গ্রহণোত্তর ২০০৯-১০ অর্থ বছরে বয়স্কভাতাভোগীর সংখ্যা ২০ লক্ষ জন থেকে বৃদ্ধি করে ২২ লক্ষ ৫০ হাজার জনে এবং জনপ্রতি মাসিক ভাতার হার ২৫০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩০০ টাকায় উন্নীত করা হয়।  ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৫৭ লক্ষ ০১ হাজার বয়স্ক ব্যক্তিকে জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হবে। চলতি ২০২১-২২ অর্থ বছরে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৩৪৪৪.৫৪ কোটি টাকা। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিবিড় তদারকি এবং সমাজসেবা অধিদফতরের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরলস পরিশ্রমে বিগত ৪ বছরে বয়স্কভাতা বিতরণে প্রায় শতভাগ সাফল্য অর্জিত হয়েছে।

বর্তমানে বয়স্কভাতা কার্যক্রমে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা হলো; ২০১৩ সালে প্রণীত বাস্তবায়ন নীতিমালা সংশোধন করে যুগোপযোগীকরণ, অধিক সংখ্যক মহিলাকে ভাতা কার্যক্রমের আওতায় অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে মহিলাদের বয়স ৬৫ বছর থেকে কমিয়ে ৬২ বছর নির্ধারণ, উপকারভোগী নির্বাচনে স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্যসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্তকরণ, ডাটাবেইজ প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ এবং ১০ টাকার বিনিময়ে সকল ভাতাভোগীর নিজ নামে ব্যাংক হিসাব খুলে ভাতার অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে।

বয়স্ক ভাতা কর্মসূচির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

(১) বয়স্ক জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করা ।

(২) বয়স্ক জনগোষ্ঠীর পরিবার ও তাদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি ।

(৩) বয়স্ক জনগোষ্ঠীর আর্থিক অনুদানের মাধ্যমে তাদের মনোবল জোরদারকরণ ।

(৪) বয়স্ক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা ও পুষ্টি সরবরাহ বৃদ্ধিতে সহায়তা করা ।

বয়স্ক ভাতা কারা পাবে

বয়স্ক ভাতা পাওয়ার যোগ্যতাগূলো হচ্ছে —

(১) সংশ্লিষ্ট বা নির্দিষ্ট এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে ।

(২) নির্ধারিত বয়স্ক ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন/জাতীয় পরিচিতি নম্বর থাকতে হবে ।

(৩) বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তির জন্য বয়স পুরুষের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৬৫ বছর এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৬২ বছর হতে হবে ।

(৪) বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তির জন্য প্রার্থীর বার্ষিক গড় আয় অনূর্ধ্ব ১০,০০০ (দশ হাজার) টাকা হতে হবে ।

(৫) বয়স্ক ভাতা নির্ধারিত বাছাই কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত হতে হবে ।

বয়স্ক ভাতা মোবাইল ব্যাংকিং

বয়স্ক ভাতা মোবাইল ব্যাংকিং

বয়স্ক ভাতা কারা পাবে না

(১) নির্ধারিত বয়স্ক ব্যক্তি সরকারি কর্মচারী পেনশনভোগী হলে ।

(২) নির্ধারিত বয়স্ক ব্যক্তি দুঃস্থ মহিলা হিসেবে ভিজিডি কার্ডধারী হলে ।

(৩) নির্ধারিত বয়স্ক ব্যক্তি অন্য কোনোভাবে নিয়মিত সরকারী অনুদান/ভাতা প্রাপ্ত হলে ।

(৪) নির্ধারিত বয়স্ক ব্যক্তি কোনো বেসরকারি সংস্থা/সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান হতে নিয়মিতভাবে আর্থিক অনুদান/ভাতা প্রাপ্ত হলে।

                                                                     পরিসংখ্যান

কভারেজ বাজেট সেবা’র বিবরণ
শুরুতে শুরুর সময় বর্তমানে শুরুতে শুরুর সময় বর্তমানে শুরুতে শুরুর সময় বর্তমানে
৪.০৩ লক্ষ জন ১৯৯৭-৯৮ ৫৭.০১ লক্ষ জন

(২০২১-২২)

১২.৫০ কোটি টাকা ১৯৯৭-৯৮ ৩৪৪৪.৫৪ কোটি টাকা জনপ্রতি মাসিক ১০০ টাকা হারে ৩ মাস পরীক্ষামূলক ১৯৯৭-৯৮ জনপ্রতি মাসে ৫০০ টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হয়​(২০২১-২২)।

 

                                                          বয়স্কভাতার কালানুক্রমিক বৃদ্ধি

অর্থবছর উপকারভোগীর সংখ্যা

(হাজার জনে)

জনপ্রতি মাসিক ভাতার হার (টাকায়) বার্ষিক বাজেট

(কোটি টাকায়)

১৯৯৭-৯৮ ৪০৩.১১ ১০০ ১২.৫০
১৯৯৮-৯৯ ৪০৩.১১ ১০০ ৪৮.৫০
১৯৯৯-০০ ৪১৩.১৯ ১০০ ৫০.০০
২০০০-০১ ৪১৫.১৭ ১০০ ৫০.০০
২০০১-০২ ৪১৫.১৭ ১০০ ৪৯.৯২
২০০২-০৩ ৫০০.৩৯ ১২৫ ৭৫০.৫৮
২০০৩-০৪ ৯৯৯.৯৯ ১৫০ ১৭৯.৯৯
২০০৪-০৫ ১৩১৫.০০ ১৬৫ ২৬০.৩৭
২০০৫-০৬ ১৫০০.০০ ১৮০ ৩২৪.০০
২০০৬-০৭ ১৬০০.০০ ২০০ ৩৮৪.০০
২০০৭-০৮ ১৭০০.০০ ২২০ ৪৪৮.৮০
২০০৮-০৯ ২০০০.০০ ২৫০ ৬০০.০০
২০০৯-১০ ২২৫০.০০ ৩০০ ৮১০.০০
২০১০-১১ ২৪৭৫.০০ ৩০০ ৮৯১.০০
২০১১-১২ ২৪৭৫.০০ ৩০০ ৮৯১.০০
২০১২-১৩ ২৪৭৫.০০ ৩০০ ৮৯১.০০
২০১৩-১৪ ২৭২২.৫০ ৩০০ ৯৮০.১০
২০১৪-১৫ ২৭২২.৫০ ৪০০ ১৩০৬.৮০
২০১৫-১৬ ৩০০০.০০ ৪০০ ১৪৪০.০০
২০১৬-১৭ ৩১৫০.০০ ৫০০ ১৮৯০.০০
২০১৭-১৮ ৩৫০০.০০ ৫০০ ২১০০.০০
২০১৮-১৯ ৪০০০.০০ ৫০০ ২৪০০.০০
২০১৯-২০ ৪৪০০.০০ ৫০০ ২৬৪০.০০
২০২০-২১ ৪৯০০.০০ ৫০০ ২৯৪০.০০
২০২১-২০২২ ৫৭০১.০০ ৫০০ ৩৪৪৪.৫৪

 

বয়স্ক ভাতা কবে চালু হয়

১৯৯৭-৯৮ অর্থবছর হতে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলাসহ ১০ জন দরিদ্র বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে প্রতিমাসে ১০০ টাকা হারে ভাতা প্রদানের আওতায় আনা হয় । এরপরে দেশের সকল পৌরসভা ও সিটিকর্পোরেশন এ কর্মসূচির আওতাভুক্ত করা হয় । বাংলাদেশের বয়স্ক জনগনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বয়স্কভাতা পেয়ে থাকে ।

বয়স্ক ভাতা কত টাকা

বয়স্ক ভাতা কর্মসূচী ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছর শুরু হয় তখন নির্ধারিত বয়স্ক ব্যক্তিদের প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে দেওয়া হতো এবং পরে ২৫০ টাকায় উন্নীত করা হয় । ২০০৯-১০ অর্থ বছরে বয়স্কভাতাভোগীর জনপ্রতি মাসিক ভাতার হার ২৫০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩০০ টাকায় উন্নীত করা হয় । ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে নির্ধারিত বয়স্ক ব্যক্তিদের জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হয় ।

বয়স্ক ভাতা মোবাইল ব্যাংকিং

২০২১ সালের জানুয়ারী থেকে বয়স্ক ভাতা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি মোবাইল আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’ ও ‘বিকাশ’-এর মাধ্যমে সরাসরি উপকারভোগীদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হয় ।

বয়স্ক ভাতা মোবাইল ব্যাংকিং উপকারভোগীদের আর ব্যাংকে গিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা তুলতে হবে না । তারা বাড়ির আশপাশের যেকোনো নগদ ও বিকাশ এজেন্ট থেকে ভাতার টাকা উত্তোলন করতে পারবেন ।

বর্তমানে বয়স্ক ভাতা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে দেওয়া হয়ে থাকে । আপনি যে নাম্বারটি দেওয়া আছে সেটি যদি “নগদ” বা “বিকাশ” একাউন্ট থেকে থাকে তাহলে এর একাউন্ট ব্যালেন্স চেক করলেই জানতে পারবেন যে আপনার বয়স্ক ভাতার টাকা এসেছে কিনা ।

বয়স্ক ভাতা আবেদন

আপনি বয়স্ক ভাতা আবেদন করতে পারবেন । এজন্য বয়স্ক বাংলাদেশী নাগরিকদের নিকট হতে সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক ভাতা প্রদানের লক্ষ্যে অনলাইনে দরখাস্ত আহবান করতে পারবেন । বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য যেমন- ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য এবং আবেদনপত্র সাবমিট করার জন্য ছবি, সিগনেচার সহ প্রয়োজনীয় সকল তথ্য নিয়ে বয়স্ক ভাতা আবেদন করতে হয় । অনলাইনে সঠিকভাবে বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে না পারলে ভাতা প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যেতে পারে ।

সুতরাং, online এর মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা আবেদন করার জন্য যদি আপনার প্রয়োজনীয় সকল তথ্য ঠিকঠাক থাকে তাহলে নিচের লিংক থেকে এখনই সমাজসেবা অধিদপ্তরের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করতে পারবেন ।

বয়স্ক ভাতা আবেদন

বয়স্ক ভাতা প্রশ্ন এবং উত্তর

১। প্রশ্নঃ বয়স্ক ভাতা কি?

উত্তরঃ বয়স্ক ভাতা হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রশংসনীয় কার্যক্রম । এই কার্যক্রমের অধিনে বয়স্ক ভাতা বাংলাদেশের বয়স্ক ব্যাক্তি যারা দুস্থ, উপার্জনহীন বা স্বল্প উপার্জনক্ষম বৃদ্ধ বা বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা ও মর্যাদা বৃদ্ধিতে প্রদান করা হয়ে থাকে । বাংলাদেশে এই কর্মসূচি শুরু হয় ১৯৯৭-৯৮ অর্থ বছরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ।

২। প্রশ্নঃ বয়স্ক ভাতা মোবাইল ব্যাংকিং কি?

উত্তরঃ ২০২১ সালের জানুয়ারী থেকে বয়স্ক ভাতা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি মোবাইল আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’ ও ‘বিকাশ’-এর মাধ্যমে সরাসরি উপকারভোগীদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হয় ।

COMMENTS

WORDPRESS: 0