গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া করাটা একটি ভালো দিক। খুব অল্প পুঁজিতে গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া করে আপনিও হয়ে যেতে পারেন লাখপতি। অনেকে মনে করেন গ্রামে ব্যবসার আ
গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া করাটা একটি ভালো দিক। খুব অল্প পুঁজিতে গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া করে আপনিও হয়ে যেতে পারেন লাখপতি। অনেকে মনে করেন গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া করাটা একটা লস প্রজেক্ট। কিন্তু আজ আমি আপনাদের সব ভুল ধারণা ভেঙ্গে দেওয়ার চেষ্টা করব।
আমাদের দেশ পূ্বের তুলনায় অনেক বেশি উন্নত হলেও এখনও কিন্তুু এমন অনেক জায়গা আছে। যে জায়গা গুলো এখনও শহর থেকে অনেক দুরে অবস্থান করে আছে। যাকে আমরা বলে থাকি গ্রাম অঞ্চল। আর আমাদের দেশ বাংলাদেশে এই গ্রাম অঞ্চল এর সংখ্যা কিন্তুু মোটেও কম নয়। আর যেহুতু আমাদের দেশে এখনও গ্রাম অঞ্চলের সংখ্যা বেশি ৷
সেহুতু এটা সহজেই অনুমান করে নেয়া যায় যে, আমাদের দেশের প্রাই বেশিরভাগ মানুষ এখনও গ্রামে বাস করে। আর এই গ্রামে বাস করা মানুষ গুলোকে নিয়েই মূলত আজকের আর্টিকেলটা লেখা হয়েছে। মূলত আমাদের সবার মাঝে নিজের পায়ে দাড়ানোর একটা অপ্রান চেস্টা থাকে। কেননা, চাকরি সংকট দেশে যেখানে চাকরি পাওয়াটা সোনার হরিণ হয়ে দাড়িয়েছে। সেখানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য চাকরির বিকল্প ব্যবসা করা হলো অতি বু্দ্ধিমানের কাজ।
কেননা, চাকরি না করে যদি আপনি নিজেকে ব্যবসার কাজে মনোনিবেশ করেন। তাহলেও কিন্তুু আপনি এখান থেকে নিজের একটা সফল ক্যারিয়ার গড়ে নিতে পারবেন। কিন্তুু ব্যবসা করার ক্ষেএেও সমস্যা বাধে অন্য জায়গাতে। যারা মূলত গ্রামে থাকে, তাদের গ্রাম থেকে ব্যবসার সূচনাতে বেশ ঝামেলার মুখোমুখি হতে হয়।
প্রথমত যারা গ্রামে বাস করে তারা আসলে বুঝে উঠতে পারে না যে, গ্রামে লাভজনক ব্যবসা কোন গুলো। কারন তাদের কাছে গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া গুলো অজানা থেকে যায়। আর যতোক্ষন পর্যন্ত আপনি সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা কোনটি সে সম্পর্কে জানতে পারবেন না। ততক্ষণ আপনি কোনো ব্যবসা শুরু করতে পারবেন না ৷
যেখানে আপনি স্মার্ট ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে জানতে পারবেন। যেগুলো মূলত লস ছাড়া ব্যবসা। তো যদি আপনি গ্রামে থেকে থাকেন। এবং যদি আপনি চান যে, গ্রামে থেকে কোনো লাভজনক ব্যবসা করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবেন। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেক হেল্পফুল হবে। তাই চেস্টা করবেন আজকের পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার।
এইগুলো পড়তে পারেনঃ-
- আলিবাবা থেকে পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশে ব্যবসা করার উপায়
- সফল উদ্যোক্তা হতে হলে কি করবেন?
- বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন
- বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা কোনগুলো ২০২১
কারন আজকের আর্টিকেলে আমি গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া, মাঝারি ব্যবসার আইডিয়া থেকে শুরু করে উৎপাদন ব্যবসার আইডিয়া এবং ছাত্রদের জন্য ব্যবসা সম্পর্কেও একেবারে বিষদভাবে আলোচনা করবো। তো দেরি না করে চলুন সরাসরি মূল আলোচনা তে ফিরে যাওয়া যাক।
গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া ২০২১
যারা এখনও মনে করেন যে, গ্রামে থেকে কোনো ব্যবসা করা সম্ভব না ৷ তাদের ধারনা কিন্তুু সম্পূর্ন ভুল। কারন বর্তমান সময়ে এমন অনেক ধরনের ব্যবসা রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া করে আপনি নিজের ক্যারিয়ার কে সফলভাবে গড়ে তুলতে পারবেন।
বর্তমানে আপনার বা আমার মতো এমন অনেক মানুষ আছে। যারা মূলত এখনও গ্রামে বাস করে ৷ অথচ তারা বিভিন্ন ব্যবসার মাধ্যমে নিজেকে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছে। কেননা, তারা কিন্তুু পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া গুলোকে অনেক আগে থেকেই জানতে পেরেছে।
তো আমি অনেক মানুষের সাথে যোগাযোগ করে এবং অনলাইন এর বিভিন্ন মাধ্যমে রিসার্চ করার পর এমন কিছু লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানতে পেরেছি। যে ব্যবসা গুলো আপনি নিজের গ্রাম থেকে করতে পারবেন ৷ এবং এই ব্যবসা গুলোর মাধ্যমে আপনিও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।
১. কোয়েল পাখির ব্যবসা আইডিয়া
গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া মধ্য, কোয়েল পাখির খামার একটি নতুন আইডিয়া। গ্রামে যারা এখনো বেকার যুবক আছেন, তারা খুব সহজেই অল্প মূলধন নিয়ে কোয়েল পাখি পালন করতে পারেন।
এমনকি, আপনি আপনার বর্তমান পেশায় থেকেও কোয়েল পাখির খামার করতে পারেন। হাঁস-মুরগী মতো ব্যাপক পরিচিত না হলেও কোয়েল পাখি বর্তমানে বাংলাদেশে দিন দিন জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। কারন অল্প মূল্যে, কম জায়গায় ও অল্প খাদ্যে লাভজনক কোয়েল পালন করা সম্ভব।
কেন আপনি কোয়েল পাখি পালন করবেন
- এ পাখি আকারের ছোট, তাই সামান্য যায়গাতেই কোয়েল পাখি পালন করা সম্ভব।
- ছোট হওয়ায় খাদ্য খরচ তুলনামূলকভাবে অন্যান্য পোল্ট্রি খামারের চেয়ে কম।
- কোয়েল পাখি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং মাত্র 6 থেকে 7 সপ্তাহ বয়সে ডিম দেয়।
- প্রাথমিক খরচ খুব কম, তাই আপনি খুব অল্প মূলধন নিয়ে কোয়েল পাখির ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
১০০০ কোয়েল পাখির মাসিক ব্যয়
১) দৈনিক খাবার= ১০০০x২৫=২৫০০০ গ্রাম =২৫ কেজি
প্রতি মাসের খাবার খরচ =২৫x৩০ কেজি=৭৫০কেজিx৩৬ টাকা =২৭,০০০ টাকা।
২) ওষুধ ও অন্যান্য খরচ = ১,০০০ টাকা
প্রতি মাসে মোট খরচ হবে = ২৮,০০০ টাকা
১০০০ কোয়েল পাখি থেকে মাসিক আয়
দৈনিক কোয়েল পাখি থেকে ডিম পাওয়া যাবে= ৮০০ টি
প্রতিটি ডিমের দাম ১.৮ টাকা হলে, প্রতিদিন ডিম থেকে আয় হবে= ৮০০x১.৮=১,৪৪০ টাকা।
তাহলে, প্রতি মাসে আয় করা যাবে = ১,৪৪০x৩০=৪৩,২০০ টাকা
১০০০ কোয়েল পাখি থেকে মাসিক মোট আয় হবে = ৪৩,২০০ টাকা।
মাসিক লাভ = ৪৩,২০০ –২৮,০০০ = ১৫,২০০ টাকা।
এভাবে আপনি ২০০০ কোয়েল পাখি পালন করতে পারলে মাসে কমপক্ষে ৩০,০০০ টাকা আয় করতে পারবেন।
২. হস্ত শিল্পের কাজ
আমরা সবাই জানি যে, হস্তশিল্প হলো আমাদের কাছে এক ধরনের সৌখিন বস্তু। যা মানুষ শখের বশে কিনে থাকে। বাড়ির আঙ্গিনা থেকে শুরু করে ঘরের পরিবেশ কে সৌন্দর্য বান্ধব করার জন্য এমন অনেক মানুষ আছেন।
যারা মূলত এই ধরনের সৌখিন বস্তু গুলো ক্রয় করে থাকে। তো এই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে আপনি নতুন একটা ব্যবসার আইডিয়া কে কাজে লাগাতে পারবেন। আপনি যদি এমন হস্ত শিল্প গুলো নিজে থেকে তৈরি করে কিংবা অন্য কোনো কারিগর কে দিয়ে তৈরি করার পর।
সেগুলো কে মানুষের কাছে পাইকারি কিংবা খুচরো মূল্যে বিক্রি করতে পারেন। তাহলে কিন্তুু আপনি এই ব্যবসা থেকে বেশ ভালো পরিমান টাকা আয় করে নিতে পারবেন।
গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া
৩. গরু-ছাগল, হাঁস মুরগি বা কবুতর পালন
যদি আপনি গ্রামে থেকে ঘরোয়া পদ্ধতিতে কোনো ধরনের ব্যবসা করতে চান। তাহলে আপনার জন্য উপযুক্ত একটি ব্যবসা হবে, গৃহপালিত পশুপাখি লালন পালন করা।
মূলত মেয়েদের জন্য এটি হবে সর্বোপরি অন্যতম একটি ব্যবসা। যার মাধ্যমে আপনি স্বল্প পরিমান ইনভেস্ট করেই উক্ত ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন।
তো আপনি যদি গ্রামে থেকে এই ধরনের ব্যবসা করতে চান। তাহলে সবার আগে আপনাকে যে কোনো একটি বা দুটি পদ্ধতিতে গৃহপালিত পশু পাখি পালনের ব্যবসাটি শুরু করতে হবে।
যেমন, আপনি যদি গরু পালনের ব্যবসা শুরু করতে চান। তাহলে প্রথমে আপনাকে শুধু গরু দিয়েই শুরু করতে হবে। কারন গরু থেকে আপনি দুধের ব্যবসার আইডিয়া থেকে আরও বিভিন্ন উপায়ে টাকা আয় করতে পারবেন।
এবং পরবর্তীতে আপনি যখন একটি ব্যবসা কে দাড় করাতে পারবেন ৷ তখন আপনি গরুর পাশাপাশি ছাগল পালন, হাঁস মুরগী পালন, কবুতর পালন এর ব্যবসা করতে পারবেন ৷
আর এই ব্যবসা গুলো করার মাধ্যমে নিজেকে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন।
৪. মোবাইল লোড ও মেরামতের ব্যবসা
একটি মোবাইল সার্ভিসিং সেন্টারের গুরুত্ব যে কত বেশি। তা আপনি তখনি বুঝতে পারবেন, যখন আপনার নিজের হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি কোনো সময় নষ্ট হবে।
আর তখন সেই মানুষ গুলোকে বেশ বিপাকে পড়তে হয়। যারা মূলত একেবারে গ্রাম অঞ্চলে বাস করে। কারন এই নষ্ট মোবাইল গুলো সার্ভিসিং করানোর জন্য তাদের কে অনেক দুরের শহরে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে।
কিন্তুু এই সমস্যা সহজেই নিরসন হবে, যদি আপনার গ্রামের কাছে কোনো একটি ভালো মানের মোবাইল সার্ভিসিং এর দোকান থাকে। কারন হাতের কাছে যদি কোনো সমস্যার সমাধান করা যায়।
তাহলে মানুষ আর কষ্ট করে দুরে যেতে চাইবে না।
তাই আপনিও এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আপনার গ্রাম থেকেই একটি ভালো মানের মোবাইল সার্ভিসিং এর বিজনেস শুরু করে দিতে পারবেন।
আর মোবাইল সার্ভিসিং করার পাশাপাশি আপনি মোবাইলের ফ্ল্যাক্সিলোড, বিকাশ, নগদ এর লেনদেন করার ব্যবসাও করতে পারবেন।
তবে আপনি যদি গ্রাম থেকে মোবাইল সার্ভিসিং করার ব্যবসা করতে চান ৷ তাহলে সবার আগে আপনাকে ভালো কোনো ট্রেনিং সেন্টার থেকে সার্ভিসিং এর সকল খুটিনাটি সম্পর্কে দক্ষ হতে হবে। তাহলে আপনি এই ব্যবসা থেকে মোটামুটি পর্যায়ের একটা আয় করতে সক্ষম হবেন।
এইগুলো পড়তে পারেনঃ-
- আলিবাবা থেকে পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশে ব্যবসা করার উপায়
- সফল উদ্যোক্তা হতে হলে কি করবেন?
- বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন
- বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা কোনগুলো ২০২১
৫. গ্রামে ফার্মেসী ব্যবসার আইডিয়া
বর্তমান সময়ে শহর কিংবা গ্রাম যেখানেই আপনি বাস করেন না কেন। সব জায়গার জন্য উপযুক্ত একটি ব্যবসা হলো ফার্মেসী ব্যবসা। যেখান থেকে আপনি স্বল্প পরিমান ইনভেস্ট করার মাধ্যমে একটা মোটা অংকের প্রফিট আয় করতে সক্ষম হবেন।
কারন আজকের দিনে কিন্তুু ঔষধ আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু হয়ে দাড়িয়েছে। আমরা যেমন মোবাইল চালানোর জন্য ব্যাটারি তে চার্জ করে রাখি।
ঠিক একইভাবে মানুষ এখন তাদের শরীরকে সুস্থ সবল রাখার জন্য ওষুধ কে করে নিয়েছে নিত্যদিনের সঙ্গী। অপরদিকে বর্তমান বাজারে সব জিনিসের দামাদামি করা গেলেও আপনি ওষুদের দোকানে গিয়ে কোনো প্রকার দামাদামি করতে পারবেন না।
কারন এখানে আপনাকে ওষুধের যে দাম বলা হবে। আপনাকে সেই দাম দিয়েই ওষুধ কিনে নিতে হবে। তাই আপনি চাইলে খুব কম সময়ের মধ্যে অধিক লাভ আয় করতে পারবেন এই ফার্মেসি ব্যবসা থেকে।
তবে যদি আপনি গ্রাম থেকে ফার্মেসি ব্যবসা করতে চান। তাহলে আপনাকে শুরুর দিক থেকে শেষ পর্যন্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে।
যেমন, আপনি যেখানেই ফার্মেসী ব্যবসা করার চেস্টা করুন না কেন। সবার আগে আপনাকে ড্রাগ লাইসেন্স করতে হবে। কারন ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া আপনি এই ব্যবসাটি কন্টিনিউ করতে পারবেন না। এবং এই ব্যবসা করতে শুরুর দিকে আপনাকে মোটা অংকের টাকা ইনভেষ্ট করতে হবে।
৬. কৃষি পণ্যের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা
আমরা সবাই জানি যে, আমাদের বাংলাদেশ এখনও কিন্তুু কৃষি প্রধান দেশ হিসেবে বিবেচিত রয়েছে। অর্থ্যাৎ, আমাদের দেশের অর্থনীতির মোট আয় থেকে প্রায় বেশিরভাগ অংশ আসে কৃষি খাত থেকে। আর এর কারনে এটা খুব সহজেই অনুমান করা যায় যে, আমাদের দেশে এখনও অনেক মানুষ আছে। যারা মূলত কৃষি কাজ এর সাথে সরাসরি সম্পর্ক যুক্ত।
আর এই কৃষক ভাইদের কে কেন্দ্র করে আপনিও একটা নতুন লাভজনক ব্যবসা করে টাকা আয় করতে পারবেন। এবং সেই ব্যবসাটির নাম হলো, কৃষি পণ্যের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা। যেখানে আপনার টার্গেটেড কাস্টমার হবে আমাদের দেশের কৃষকরা।
দেখুন, যারা গ্রামে থাকেন এবং কৃষি কাজে একটু হলেও ধারনা আছে। তারা অবশ্যই জেনে থাকবেন যে, কৃষিকাজের জন্য কিন্তুু অনেক রকমের প্রয়োজনীয় সামগ্রীর প্রয়োজন হয়। আর যখন তাদের এসব প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দরকার হয়। তখন তাদের কে দুরে বড় বড় শহর থেকে এসব সামগ্রী কিনে নিয়ে আসতে হয়।
এখন আপনি যদি গ্রামে থেকে কৃষকদের প্রয়োজনীয় সেই সামগ্রীর খুচরা এবং পাইকারি ব্যবসা করেন ৷ তাহলে কিন্তুু মানুষ আর শহরে গিয়ে সেগুলো কিনে আনার প্রয়োজন বোধ করবে না।
এবং আপনিও তাদের সাথে ব্যবসা করে মোটামুটি ভালো পরিমান এর মতো প্রফিট আয় করতে পারবেন।
৭. মুদি দোকান ব্যবসা
যদি প্রশ্ন আসে যে, গ্রামের সনাতন পদ্ধতিতে একটি ব্যবসার নাম কি। তাহলে এর উওর হবে, মুদি দোকান ব্যবসা। যা এখন থেকে নয়, বরং অনেক অনেক বছর আগে থেকেই মানুষ গ্রামে এই ধরনের ব্যবসা করে আসছে।
সাধারনত যেসব দোকানে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য গুলোকে ক্রয় করে থাকি। সেই দোকান গুলো কে বলা হয়ে থাকে মুদি দোকান ৷ তো চাইলে আপনিও আপনার গ্রাম থেকে নিজ বাড়িতে কিংবা গ্রামের আশেপাশে হাট বাজার গুলোতে এই ধরনের ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
তবে মুদি ব্যবসা যেহুতু একেবারে গ্রাম অঞ্চলে করবেন ৷ সেখানে আপনার সামনে কিছু সমস্যার এসে দাড়াবে। যেমন, গ্রামের দোকান গুলো তে কিন্তু প্রচুর পরিমানে বাকি হয়।
অর্থ্যাৎ, মানুষ আপনার থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী গুলো ক্রয় তো করবে। কিন্তুু বেশিরভাগ সময় আপনাকে সেগুলো বাকি তে দিতে হবে। তবে আপনি যদি এই ব্যবসার সঠিক পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে জানেন ৷ তাহলে কিন্তুু আপনার জন্য এই মুদি ব্যবসা চালিয়ে যেতে তেমন কাঠঘর পোড়াতে হবে না।
আর এই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে আপনিও একটা ছোট আকারের ব্যবসা শুরু করে দিতে পারবেন। যেখানে আপনাকে মোটা অংকের টাকা ইনভেস্ট করতে হবে না।
কোনো লোকবল এর প্রয়োজন হবে না। বরং আপনি সহো আপনার বাড়ির লোকজন দিয়ে অনেক কম টাকায় একটি কাপড় এর ব্যাগ তৈরি করে ৷ সেগুলোকে বিক্রি ও গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া করে বেশ ভালো পরিমান টাকা আয় করে নিতে পারবেন।
৮. দর্জির ব্যবসা
গ্রামে ব্যবসার আইডিয়ার মধ্যে দর্জির ব্যবসা একটি পুরাতন ব্যবসা। অতীতেও এর শক্ত অবস্থান ছিল, বর্তমানেও আছে। আপনি চাইলে, গ্রামে এ ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন। কেননা, মানুষ বেঁচে থাকলে জামা-কাপড় পড়া লাগবেই। আপনি নিজে কাজ না জানলে, কর্মচারী রাখুন। এছাড়া, জামা কাপড় সেলাইয়ের পাশাপাশি নতুন জামা-কাপড় তৈরি করে বিক্রি করুন।
৯. সার ও কীটনাশক এর ডিলারশিপ ব্যবসা
মানুষ যেমন খাদ্য গ্রহন ছাড়া বেঁচে থাকতে পারবে না। ঠিক তেমনি ভাবে বর্তমান সময়ে চাষাবাদ করার জন্য কীটনাশক এর কোনো বিকল্প নেই। বর্তমানে কোনো কিছু চাষাবাদ করতে হলে অবশ্যই আপনাকে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। যার কারনে আজকের দিনে কীটনাশক এর চাহিদা অনেক গুন বেড়ে গিয়েছে।
আর তাদের এই চাহিদা কে কেন্দ্র করে আপনিও একটি ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন। যেটি হলো সার ও কীট নাশকের ডিলারশিপ এর ব্যবসা। যা আপনি আপনার গ্রাম থেকেই পরিচালনা করতে পারবেন।
তবে আপনি যদি গ্রাম থেকে এই ধরনের ব্যবসা করতে চান। তাহলে কিন্তুু ঘর থেকে শুরু করে অন্যান্য কারনে একটা মোটা অংকের টাকা ইনভেস্ট করার প্রয়োজন হবে। এবং যখন আপনি কৃষকদের চাহিদা মতো প্রয়োজনীয় কীটনাশক সাপ্লাই দিতে পারবেন৷ তখন আপনি এই কীটনাশক এর ব্যবসা থেকে প্রচুর পরিমান টাকা আয় করে নিতে পারবেন।
১০. বেকারির ব্যবসা
আমার মতে যারা নতুন হিসেবে কোনো ব্যবসা করার চিন্তা করছেন। তাদের বেকারির ব্যবসা দিয়ে শুরুটা করা উচিত। কারন এখান থেকে আপনি যদি সফলভাবে কাজ করতে পারেন। তাহলে আপনাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না।
একটি বেকারি তে মূলত বিভিন্ন ধরনের মুখরোচর খাবার তৈরি করা হয়ে থাকে। যেমন, বিস্কুট, চানাচুর, কেক ইত্যাদি। এবং এই জাতীয় খাবার এর চাহিদা যে কতটা বেশি। তা আমার থেকে আপনার ভালো জানার কথা। কারন আমাদের দেশে ভাতের চাহিদার পাশাপাশি এসব খাবারের চাহিদা কিন্তুু অনেক গুন বেশি রয়েছে।
আর এই চাহিদার যোগান দিতে আপনিও একটি বেকারি তৈরি করতে পারবেন। যেখানে আপনি নিজের বেকারি থেকেই এসব প্রয়োজনীয় মুখরোচক খাবার গুলো তৈরি করতে পারেন। এবং সেগুলো কে বাজার জাত করে ভালো পরিমান টাকা লাভ করে নিতে পারবেন।
কিন্তুু এই ব্যবসাটি শুরু করতে হলে আপনাকে শুরুতে মোটা অংকের টাকা ইনভেস্ট করতে হবে। এছাড়াও আপনি যেখানে বেকারি টি তৈরি করবেন। সেখানে বড়সড় একটা জায়গার প্রয়োজন হবে।
এর পাশাপাশি আপনার বেকারি তে তৈরি করা খাবার গুলো বাজার জাত করার জন্য দক্ষ মার্কেটিং করার মতো জনবল থাকতে হবে। তাহলে আপনি গ্রামে বেকারি ব্যবসা, গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া করে প্রফিট আয় করতে পারবেন।
১১. ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র সারাই
গ্রামে ব্যবসার আইডিয়ার মধ্যে এটি একটি লাভজনক ব্যবসা। গ্রামে থেকে যদি আপনি বেশ ভালো একটা ব্যবসা করতে চান এবং গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া খুজে থাকেন, তাহলে আপনার জন্য অন্যতম একটি ব্যবসা হবে ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র সারাই।
যেখানে আপনি অনেক কম মুলধন দিয়ে ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র সারাই এর ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন। আর এই ব্যবসা থেকে আপনি কোনো প্রকার ব্যয় করা ছাড়াই মাসের পর মাস টাকা আয় করে নিতে পারবেন।
দেখুন, বর্তমান সময়ে প্রায় কম বেশি সব জায়গাতে ইলেকট্রিসিটি রয়েছে। আর যেহুতু ইলেকট্রিসিটি রয়েছে সেহুতু এসব কাজে ব্যবহার করা পন্য গুলো অনেক সময় খারাপ হয়ে যায়। আর এই ধরনের সমস্যা গুলো তারাই সমাধান করতে পারেন। যারা মূলত ইলেকট্রিশিয়ান এর কাজ গুলো যথেষ্ট দক্ষতা সম্পন্ন।
এখন আপনি যদি গ্রামে থেকে নিজ বাড়িতে কিংবা আশেপাশে কোনো জায়গাতে ইলেকট্রিক সামগ্রীর সারাই এর কাজ করেন। তাহলে কিন্তুু আপনার কোনো কাস্টমার এর অভাব থাকবে না। এবং এই কাজের বিনিময়ে আপনি প্রতিদিন ভালো পরিমান টাকা আয় করতে পারবেন।
তবে যদি আপনি নিজে থেকেই এই ব্যবসাটি করতে চানন৷ তাহলে সবার আগে আপনাকে এই কাজগুলো কোনো ট্রেনিং সেন্টার থেকে শিখে নিতে হবে। এরপর আপনি উক্ত কাজ গুলো করতে পারবেন ৷
১২. তাজা ডিম বিক্রি করার ব্যবসা
ডিম বিক্রির কথাটা শুনে অনেকে হয়তবা এড়িয়ে যাবেন। কিন্তুু এড়িয়ে যাওয়ার আগে কিছু কথা আপনার জেনে নিতে হবে। সেটি হলো, কোনো ব্যবসা কে ছোট করে দেখাটা বোকামি ছাড়া কিছুই নয়।
কারন যারা আজকের দিনে কোটি কোটি টাকার মালিক। তারাও কিন্তুু একটা সময় ছোট থেকেই শুরু করেছিলো। এবং এরপরেই তারা আজকে এই পর্যন্ত আসতে পেরেছে।
তো ডিম বিক্রির ব্যবসা কে কখনই ছোট করে দেখাটা ঠিক হবে না। কারন আপনি গ্রাম থেকে হোক কিংবা শহর থেকে হোক। এই ব্যবসাটি পরিচালনা করতে আপনাকে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না।
কারন এই ব্যবসাটি আপনি ছোট পরিসরে শুরু করতে পারবেন ৷ গ্রাম থেকে তাজা ডিম নিয়ে এসে সেগুলো কে সংরক্ষন করার পর সেগুলো কে বাজারে এনে বিক্রি করে দিতে পারবেন। এবং গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া করে এভাবে আপনি কম দামে ডিম কিনে শহরে বেশি দামে বিক্রি করার মাধ্যমে ভালো পরিমানে প্রফিট আয় করে নিতে পারবেন।
১৩. চা-শিঙাড়ার দোকান ব্যবসা
রাস্তাঘাটে চলার সময় আমরা রাস্তার মোড়ে অনেক সময় চা-শিঙাড়ার দোকান দেখে থাকি। আবার প্রয়োজনে কিংবা অপ্রয়োজনে আমরা এসব দোকানে খাবার খেয়ে থাকি। কিন্তুু কখন কি ভেবে দেখেছেন, এসব ব্যবসা থেকে কি পরিমান লাভ করা যায়।
হ্যাঁ বন্ধুরা, এই ব্যবসা থেকেও কিন্তুু অনেক টাকা লাভ করা যায়। তাই চাইলে আপনি ভালো একটা জনবহুল স্থান দেখে মাএ দু একজন মানুষ নিয়েই এই ধরনের ব্যবসা শুরু করে দিতে পারবেন। যেখান থেকে আপনি একটা ভালো পরিমান টাকা লাভ করে নিতে পারবেন।
১৪. বই এর দোকান ব্যবসা
গ্রামে সব ধরনের দোকান চোখে পড়লেও কিন্তুু বই এর দোকান খুব বেশি চোখে পড়ে না। কারন অনেকের ধারনা যে এই ধরনের ব্যবসা থেকে তেমন কোনো প্রফিট আয় করা সম্ভব না। কিন্তুু আপনি জানলে অবাক হবেন যে, এই ধরনের বইয়ের দোকান থেকেও কিন্তুু ভালো পরিমানে টাকা আয় করা সম্ভব।
সেজন্য আপনি যদি সব ধরনের বই এর কালেকশন নিয়ে একটি বই এর দোকান দিতে পারেন। তাহলে কিন্তুু আপনার বই বিক্রি করার মতো কাস্টমার এর অভাব হবে না।
আর আপনি আপনার দোকান এর বই বিক্রি করে যে কমিশন পাবেন। তার পরিমান কিন্তুু মোটেও কম নয়। বর্তমানে এমন অনেক মানুষ আছেন। যারা মূলত এই বই এর দোকান ব্যবসা করে প্রচুর পরিমান টাকা আয় করে আসছে৷
১৫. বীজ এর দোকান ব্যবসা
আমরা যেসব শাক সবজি খাই। সেগুলো কিন্তুু সরাসরি জমি থেকে উৎপাদন করা হয় না। বরং প্রথমে সেগুলোর বীজকে মাটিতে ভূপাতিত করতে হয়। এরপর সেখান থেকে চারা গজায়, তারপর কিন্তুু সেগুলো খাবার তৈরিতে প্রস্তুত হয়।
তাই এ থেকে সহজেই অনুমান করে নেয়া যাবে যে, শাক সবজি উৎপাদন করার জন্য বীজ ছাড়া কল্পনা করা অসম্ভব।
আর এই অসম্ভব কে সম্ভব করার জন্য আপনি সরাসরি বীজ এর ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। যেখানে আপনি আপনার দোকানে ভালো মানের বীজ সংরক্ষন করতে পারলে অনেক দুর থেকে মানুষ আপনার বীজ কেনার জন্য আসবে। আর আপনি সেই বীজ গুলো বিক্রি করে অনেক বেশি পরিমানে টাকা আয় করে নিতে পারবেন।
এইগুলো পড়তে পারেনঃ-
- আলিবাবা থেকে পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশে ব্যবসা করার উপায়
- সফল উদ্যোক্তা হতে হলে কি করবেন?
- বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন
- বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা কোনগুলো ২০২১
গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া শেষকথা
যাই হোক, ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় কথা দৃঢ় মনোবল এবং ঝুঁকি নেয়ার মানসিকতা। সৎ ভাবে ব্যবসা করলে পরকালেও উত্তম পুরষ্কার রয়েছে। অনেকে চিন্তা করে গ্রামে কি ব্যবসা করা যায়? তাই তাদের উত্তর দেয়ার জন্য কিছু গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া লিখলাম।
যদি গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে লিখা আমাদের আজকের আর্টিকেল ভালো লেগে থাকে, তাহলে আর্টিকেলটি শেয়ার অবশই করবেন। এছাড়া আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে অবশই নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।
COMMENTS