বাংলাদেশে কত বছর বয়স পর্যন্ত মানুষ লম্বা হয়? তার সঠিক উত্তর কেউ দিতে পারবে না। কারণ সবার দৈহিক বৃদ্ধির হারও এক রকম নয়। জাতিগত বৈশিষ্ট্য, মা–বাবার
বাংলাদেশে কত বছর বয়স পর্যন্ত মানুষ লম্বা হয়? তার সঠিক উত্তর কেউ দিতে পারবে না। কারণ সবার দৈহিক বৃদ্ধির হারও এক রকম নয়। জাতিগত বৈশিষ্ট্য, মা–বাবার উচ্চতা, পুষ্টিজনিত সমস্যা, বংশগত রোগ ইত্যাদি ছাড়াও বিভিন্ন হরমোনজনিত রোগে কারও কারও দৈহিক উচ্চতা কম বা বেশি হতে পারে। আজকে আমাদের আলোচ্য বিষয় কত বছর বয়স পর্যন্ত মানুষ লম্বা হয় অথবা কত বছর পর্যন্ত লম্বা হওয়া যায়?
লম্বা হওয়া মূলত বংশগতির উপর নির্ভর করে। সৃষ্টির আদিকাল থেকেই সকল মানুষের উচ্চতা সমান ছিল না । কারণ যখন একজন মহিলার সাথে একজন পুরুষের বিবাহ হতো, তখন মায়েত গর্ভ থেকে আসা সন্তানদের জেনেটিক কোডে এই সামান্য একটু ভিন্নতা থাকতো। যার ফলে কারো ক্ষেত্রে মায়ের উচ্চতা প্রাধান্য পায়। আবার কারো ক্ষেত্রে বাবার উচ্চতা প্রাধান্য পায়।
বিভিন্ন দেশে কত বছর বয়স পর্যন্ত মানুষ লম্বা হয় ?
নেদারল্যান্ডস ছেলেদের গড় উচ্চতা ৬ ফিট। বাংলাদেশে সেটা ৫ ফিট ৪ ইঞ্চি। বাংলাদেশে ৫ ফিট ৯-১০ ইঞ্চির ছেলে, আবার ৫ ফিট ৩-৫ ইঞ্চির মেয়েকে লম্বাদের কাতারে নেয়া সম্ভব। যেটা নেদারল্যান্ডস এর মতো দেশে খাটো লোকের কাতার। বিভিন্ন জাতি ও তাদের দৈহিক গাঠনিক জেনেটিক কোডে বিশেষ ভিন্নতা আছে।
সুস্থ স্বাভাবিক শিশু জন্মগ্রহণের পর কয়েক বছর ধরে প্রতিবছরে প্রায় ১০ সেন্টিমিটার করে লম্বা হয়ে থাকে, যা ধীরে ধীরে কমে প্রতিবছরে ৩ থেকে ৫ সেন্টিমিটারে গিয়ে পৌঁছায়। ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সে হঠাৎই উচ্চতা বৃদ্ধির হার কয়েক মাস বা বছরের জন্য বেড়ে যায়। সাবালক হওয়ার পর উচ্চতা আর বাড়ে না বললেই চলে। এ সময় উচ্চতা বৃদ্ধি হতে পারে না। কারণ, শরীর লম্বা হবার জন্য পা ও হাতের লম্বা অস্থিগুলোর যে অংশে হরমোন কাজ করে, তা বিলুপ্ত হয়ে যায়। বলাই বাহুল্য যে সাবালক হবার পর হরমোন দিয়েও কাউকে লম্বা করা সম্ভব হয় না।
হরমোন বিশেষজ্ঞরা কেবল আনুমানিক ১১ বছর বয়সের আগে এলেই গ্রোথ হরমোন দিয়ে ফলপ্রসূ চিকিৎসা করতে পারেন। ১৫-১৬ বছরের পরে কেবল পায়ের সার্জারি করা ছাড়া উচ্চতা বাড়ানোর আর কোনো উপায় থাকে না।

কত বছর বয়স পর্যন্ত মানুষ লম্বা হয়
কখন মানুষের উচ্চতা বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়?
একজন মানুষ যখন শিশু অবস্থায় থাকে, তখনই তার উচ্চতা দেখে কিছুটা ধারণা নেয়া যায় সে কি রকম হবে? তবে ক্ষেত্রে সমান হয় না। সাধারণভাবে উচ্চতা বৃদ্ধি পায় কিশোরকালে। শৈশবে উচ্চতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর আর উচ্চতা বৃদ্ধি পায় না। কিন্তু কৈশরে যে কারোরই দুই থেকে তিন বছরের বদৌলতে খুব দ্রুতগতিতে উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। এর কারণ হচ্ছে কৈশোরকালে ছেলে মেয়েদের হরমোন নির্গত হওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়।
কৈশোর থেকেই তাদের মধ্যে জেনেটিক কোডের পরিপুর্ণ কাঠামো গঠন হওয়া শুরু হয়। এবং তাদের দেহের কাঠামো পরিবর্তন হওয়া শুরু হয়। যার ফলে দেখা যায় একটি ছেলে অথবা মেয়ে কে শৈশবে যে রকম দেখাতো বড় হলে শারীরিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে তার চেহারাটা অনেকটাই পাল্টে যায়। অথবা আগের মতো অনেকটাই মিল থাকে। তাহলে প্রশ্ন হলো কত বছর পর্যন্ত লম্বা হয়?
উচ্চতা বৃদ্ধির হার, সময়সীমা বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রকমের হয়। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে সেটা নির্ভর করে ভূগোলের উপর। কেউ দ্রুত বৃদ্ধি পায়, কেউ আবার ধীরে বৃদ্ধি পায়। আবার কেউ 18 বছর অথবা 19 বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এখন সেটা নির্ভর করবে আমাদের হাড়ের মাঝে যে বর্ধনশীল গ্রোথ প্লেট আছে সেগুলোর উপর। আপনি ততক্ষণ পর্যন্ত লম্বা হবেন, যত সময় পর্যন্ত আপনার হাড়ের গ্রোথ প্লেট এর বৃদ্ধি বন্ধ না হয়ে যায়।

কত বছর বয়স পর্যন্ত মানুষ লম্বা হয়
যখন আপনার গ্রোথ পরিপূর্ণ হয়ে যাবে, সেগুলোর বৃদ্ধি আপনা আপনি পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। এবং শারীরিক উচ্চতা বৃদ্ধি হওয়াও বন্ধ হয়ে যাবে। এটা অনেকটা এরকম যে, জিনগত কারনে আপনার যত উচ্চতা হবে, ঠিক ততো উচ্চতা হয়ে গেলেই সে হার বৃদ্ধি পাওয়া বন্ধ করে দেয়।
কত বছর বয়স পর্যন্ত মানুষ লম্বা হয়
লম্বা হওয়ার সহজ কোন উপায় নাই কারণ আপনার লম্বা হওয়া নির্ভর করছে আপনার পরিবারের জিনের উপর I উচ্চতা বৃদ্ধির মূল উপাদান গ্রোথ হরমোন এমন একটি পদার্থ যা আপনার শরীরে প্রাকৃতিক ভাবেই তৈরি হয়। বয়ঃসন্ধিকালে বেশি পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালরি , খনিজ পদার্থ , ভিটামিন মানবদেহের নতুন কোষ গঠন ও হার নির্মাণে সহায়তা কোরে । তবে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে মানবদেহের বৃদ্ধির ৮০% নির্ভর কোরে জিন তত্ত্বের উপর।
আপনার পরিবারের লোকেরা (বাবা,মা) যদি বেঁটে হন, তাহলে আপনার বেঁটে হওয়ার সম্ভবনা বেশি। মেয়েদের মাসিক হয়ে যাওয়ার পর থেকে তারা আর বেশি বাড়ে না( লম্বা হয় না)। আপনি লম্বা হওয়ার জন্য কতগুলো জিনিস করতে পারেন। ভারসাম্য বিশিষ্ট ( প্রোটিন, ক্যালসিয়াম , ভিটামিন ডি , জিঙ্ক যুক্ত) খাদ্য খেতে হবে – প্রচুর পরিমানে পানি পান করে উচিত- প্রতিদিন সাঁতার, দৌড়ানো এই ধরনের exercise করা উচিত- রাতে ৮ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমানো দরকার- সব সময় সোজা হয়ে বসবেন এবং সোজা হয়ে দাঁড়াবেন- নিজের উপর আত্মবিশ্বাস রাখবেন – ধুমপান করবেন না এবং যে ধুমপান করে তার থেকে দুরে থাকবেন,Caffeine জাতীয় পানীয় পান করবেন না।
ছেলেরা কত বছর পর্যন্ত লম্বা হয় ?
ছেলেদের লম্বা হওয়ার বয়স হল 12 বছর থেকে শুরু করে প্রায় 17 অথবা 18 বছর পর্যন্ত। এমনকি 12 থেকে 16 বছর এই চার বছরে খুব দ্রুত লম্বা হয়। হয়তো 12, 13, 14 এই 3 বছরে লম্বা হওয়ার হার বেশি থাকে। কিন্তু তাই বলে যে 15, 16 বছরে বৃদ্ধি পায় না, তা কিন্তু না । দেখা গেলো প্রথম তিন বছরে আপনি যেরকম ছিলেন 15,16 তার থেকে যথেষ্ট লম্বা হয়ে গেলেন। এভাবে ছেলেরা প্রায়ই ২০ বছর পর্যন্ত লম্বা হয়। তবে ২০ বছরে যেতে লম্বা হওয়ায় ধীরতা আসে।
আরও পড়ুনঃ-
মেয়েরা কত বছর পর্যন্ত লম্বা হয় ?
মেয়েরা কৈশোরকালে খুব দ্রুত সময়ে লম্বা হয়ে যায়। এবং এদের লম্বা হওয়ার বয়সও ছেলেদের থেকে অনেক আগে শুরু হয়। যেমন ছেলেদের যদি 12 বছর থেকে লম্বা হওয়া শুরু হয়, সেক্ষেত্রে মেয়েদের দেখা যায় 10-11 বছর পর থেকে লম্বা হওয়া শুরু হয়ে যায়। বেশিরভাগ মেয়েরা খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে লম্বা হয়ে যায়। এবং পরবর্তীতে লম্বা হওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ছেলেরা দীর্ঘস্থায়ী ব্যাপী লম্বা হয়।
COMMENTS